প্রায় ৮,৮৪৯ মিটার উচ্চতায় দাঁড়িয়ে থাকা পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট। হাজারো স্বপ্নবাজ মানুষ এ পর্বতকে ছুঁতে চেয়েছে, অনেকে পেরেছে, অনেকের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেছে। বছরের পর বছর ধরে এই পর্বত ঘিরে তৈরি হয়েছে ইতিহাস, ট্র্যাজেডি, কল্পনা আর বিস্ময়ের অজস্র গল্প।

চলুন জেনে নেওয়া যাক মাউন্ট এভারেস্টকে ঘিরে ১০টি অজানা ও চমকপ্রদ তথ্য-

১. এভারেস্টের উচ্চতা নিয়ে বিতর্ক
মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতা নিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরিমাপ হয়েছে। ১৯৫৫ সালে নেপাল সরকার এভারেস্টের উচ্চতা ৮,৮৪৮ মিটার (২৯,০২৯ ফুট) ঘোষণা করে। এটি দীর্ঘদিন ধরে স্বীকৃত ছিল। তবে ২০২০ সালে নেপাল ও চীন যৌথভাবে এভারেস্টের নতুন উচ্চতা ৮,৮৪৮.৮৬ মিটার (২৯,০৩১.৭ ফুট) ঘোষণা করে। এই পরিমাপের মধ্যে তুষার ও বরফের স্তরও অন্তর্ভুক্ত।

২. এভারেস্টের নামকরণ ও স্থানীয় নাম
মাউন্ট এভারেস্টের নামকরণ করা হয় ব্রিটিশ সার্ভেয়ার স্যার জর্জ এভারেস্টের নামে। তবে নেপালে এটি ‘সাগরমাথা’ নামে পরিচিত, যার অর্থ ‘আকাশের মাথা’। তিব্বতে এটি ‘চোমোলুংমা’ নামে পরিচিত, যার অর্থ ‘বিশ্বের মা’।

৩. এভারেস্টের চূড়ায় সমুদ্রের জীবাশ্ম
এভারেস্টের চূড়ায় ফসিলিফেরাস লাইমস্টোন পাওয়া গেছে। এটি প্রমাণ করে যে এটি একসময় সমুদ্রের তলদেশে ছিল। ভারতীয় টেকটোনিক প্লেট ইউরেশিয়ান প্লেটের সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে হিমালয় পর্বতমালা গঠিত হয় এবং এভারেস্টের উচ্চতা বৃদ্ধি পায়।

৪. এভারেস্টের চূড়ায় বিয়ে
২০০৫ সালে নেপালি পর্বতারোহী দম্পতি মনি মুলেপাতি ও পেম দর্জি এভারেস্টের চূড়ায় বিয়ে করেন, যা ইতিহাসে প্রথম। তারা চূড়ায় ১০ মিনিটের একটি সংক্ষিপ্ত বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেন।

৫. এভারেস্টের চূড়ায় জীবজন্তু
এভারেস্টের চূড়ার কাছাকাছি অঞ্চলে হিমালয়ান জাম্পিং স্পাইডার দেখা যায়, যা প্রায় ৬,৭০০ মিটার উচ্চতায় বাস করে। এছাড়া তুষার চিতা, হিমালয়ান তাহার, বন্য ইয়াক এবং মস্ক হরিণও এভারেস্টের বিভিন্ন উচ্চতায় দেখা যায়।

৬. এভারেস্টের চূড়ায় মৃতদেহ
এভারেস্টের চূড়ার কাছাকাছি ‘রেইনবো ভ্যালি’ নামে পরিচিত একটি এলাকা রয়েছে, যেখানে বহু পর্বতারোহীর মৃতদেহ রয়ে গেছে। এই নামকরণের কারণ মৃতদেহগুলোর পরনে থাকা রঙিন পোশাক। ‘গ্রিন বুটস’ নামে পরিচিত একটি মৃতদেহ বহু বছর ধরে একটি ল্যান্ডমার্ক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।

৭. এভারেস্টের চূড়ায় চুরি ও অপরাধ
এভারেস্টে পর্বতারোহীদের সরঞ্জাম চুরি, অক্সিজেন সিলিন্ডার চুরি এবং অন্যান্য অপরাধের ঘটনা ঘটেছে। ২০০৬ সালে ব্রাজিলিয়ান পর্বতারোহী ভিটর নেগ্রেটের মৃত্যুর পেছনে সরঞ্জাম চুরির সম্ভাবনা উত্থাপিত হয়।