মানুষের সঙ্গে ভালো ব্যবহার ও উত্তম কথা বলা ইসলামি জীবনবোধের গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। একজন মুসলিমের পরিচয় শুধু নামাজ-রোজা নয়, বরং তার মুখনিঃসৃত শব্দেও। কোরআন ও হাদিসে ভালো কথা বলার নির্দেশ স্পষ্টভাবে এসেছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন—
তোমরা মানুষদের সঙ্গে সুন্দরভাবে কথা বলো। (সূরা আল-বাকারা, আয়াত : ৮৩)। এই আয়াতে আল্লাহ মানুষকে আদেশ করেছেন যেন তারা সকলের সঙ্গে সৌজন্যমূলক ও নম্র ভাষায় কথা বলে।
আরেক স্থানে আল্লাহ বলেন, আর রহমানের বান্দা তারাই যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং অজ্ঞ লোকেরা যখন তাদেরকে সম্বোধন করে তখন তারা বলে ‘সালাম’। (সূরা আল-ফুরকান, আয়াত : ৬৩)। এই আয়াতে বোঝা যায়, উত্তেজনাপূর্ণ পরিবেশেও একজন মুমিনের জবাব হওয়া উচিত শান্তিপূর্ণ এবং নম্র।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ভালো কথা বলার গুরুত্ব অনেকবার ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন ভালো কথা বলে অথবা চুপ থাকে। (বুখারি ও মুসলিম)। এখানে বোঝানো হয়েছে, অপ্রয়োজনীয় বা কষ্টদায়ক কথা না বলে চুপ থাকাও একটি উত্তম নৈতিকতা।
ভালো কথা শুধু সম্পর্ক তৈরি করে না, বরং তা হৃদয়ে প্রশান্তি আনে। রাসুল (সা.) আরও বলেন, ভালো কথা একটি সদকা (দান) (মুসলিম)। অর্থাৎ, একজন মানুষ তার মুখের মাধ্যমে অন্যকে উপকার করতে পারে বিনা খরচেই।
বর্তমান সমাজে অনেক সম্পর্ক শুধু তিক্ত বাক্য বিনিময়ের কারণে নষ্ট হয়ে যায়। অথচ ইসলাম আমাদের শিখিয়েছে—কথায় যদি দয়া, সহানুভূতি ও নম্রতা থাকে, তবে তা শত্রুকেও বন্ধুতে পরিণত করতে পারে।
মুসলিম হিসেবে আমাদের উচিত সবসময় চিন্তা-ভাবনা করে কথা বলা, যেন তা কাউকে আঘাত না করে বরং উপকারে আসে। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ও মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিতে চায়লে মুখের ভাষা শুদ্ধ করাই হবে প্রথম পদক্ষেপ।