11:04 pm, Sunday, 22 June 2025

সম্পর্ক শেষ, বিরোধীদের সহায়তা করলে মাস্কের ‘গুরুতর পরিণতি’ হবে : ট্রাম্প

নিজের সাবেক উপদেষ্টা এবং বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্কের সঙ্গে যাবতীয় সম্পর্ক শেষ বলে ঘোষণা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেছেন যে তিনি আর মাস্কের সঙ্গে কথা বলতে চান না এবং যদি মাস্ক বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটদের সহায়তা করেন, সেক্ষেত্রে গুরুতর পরিণতি ভোগ করতে হবে তাকে।

শনিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “মাস্কের সঙ্গে আর আমার কোনো সম্পর্ক নেই। এটা শেষ হয়ে গেছে। আশা করছি, তিনি টেসলায় আরও উন্নতি করবেন।”

ভবিষ্যতে মাস্কের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের কোনো সম্ভাবনা রয়েছে কি না— এমন প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেন, “আমি এখন অন্যান্য ইস্যু নিয়ে খুবই ব্যস্ত। সম্ভবত তার সঙ্গে কথা বলার সময় পাবো না।”

বৈদ্যুতিক গাড়ি প্রস্তুতকারী কোম্পানি টেসলা, মহাকাশযান, মহাকাশ অভিযানের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ নির্মাণকারী কোম্পানি টেসলা এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সের মালিক ইলন মাস্কের সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠতার শুরু ২০২৪ সালের জুলাই থেকে। সে সময় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা চলছিল। রিপাবলিকান পার্টির শীর্ষ নেতা ও প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ট্রাম্পের বিভিন্ন প্রচারণা সভায় তখন মাস্ককে নিয়মিত দেখা গেছে। এক প্রতিবেদনে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণা তহবিলে কমপক্ষে ২৮ কোটি ৮০ লাখ ডলার চাঁদা দিয়েছিলেন মাস্ক।

তার পুরস্কারও অবশ্য তিনি পেয়েছিলেন ট্রাম্পের কাছ থেকে। নির্বাচনে জয়ী হয়ে শপথ নেওয়ার পর সরকারি কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও সরকারি ব্যয় সংকোচন করতে ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি বা ডজ নামের একটি দপ্তর খোলেন ট্রাম্প। সেই দপ্তরের প্রধান করা হয় মাস্ককে।

সম্প্রতি কর মওকুফ এবং প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বৃদ্ধি সংক্রান্ত একটি সরকারি বিলে ট্রাম্প সাক্ষর করায় মতানৈক্য শুরু হয় মাস্ক ও তার মধ্যে। এই মতানৈক্যের এক পর্যায়ে গত মে মাসের শেষ দিকে ট্রাম্প প্রশাসন থেকে অব্যাহতি নেন মাস্ক।

অব্যাহতি নেওয়ার পর বেপরোয়া হয়ে ওঠেন তিনি। ট্রাম্পের স্বাক্ষরিত বিলটি আটকাতে জনগণকে মাঠে নামার আহ্বান জানান, কুখ্যাত ও সাজাপ্রাপ্ত যৌন অপরাধী জেফ্রি এপস্টেইনের সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ক ছিল বলে দাবি করেন এবং ট্রাম্পকে ‘অকৃতজ্ঞ’ উল্লেখ করে অভিযোগ করেন যে তিনি অর্থ সহায়তা না দিলে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরে যেতেন।

শনিবারের সাক্ষাৎকারে এনবিসি’র পক্ষ থেকে ট্রাম্পকে জিজ্ঞেস করা হয় যে মাস্ক যদি এখন বিরোধী দল ডেমোক্র্যাট পার্টিকে নিয়মিত চাঁদা দিতে থাকেন তাহলে কী হবে?

জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলেন, “যদি তিনি এমন করেন, তাহলে তার পরিণতি হবে গুরুতর এবং এজন্য তাকে চড়া মূল্য দিতে হবে।”

সূত্র : এনবিসি

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সম্পর্ক শেষ, বিরোধীদের সহায়তা করলে মাস্কের ‘গুরুতর পরিণতি’ হবে : ট্রাম্প

Update Time : 07:21:38 am, Sunday, 8 June 2025

নিজের সাবেক উপদেষ্টা এবং বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্কের সঙ্গে যাবতীয় সম্পর্ক শেষ বলে ঘোষণা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেছেন যে তিনি আর মাস্কের সঙ্গে কথা বলতে চান না এবং যদি মাস্ক বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটদের সহায়তা করেন, সেক্ষেত্রে গুরুতর পরিণতি ভোগ করতে হবে তাকে।

শনিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “মাস্কের সঙ্গে আর আমার কোনো সম্পর্ক নেই। এটা শেষ হয়ে গেছে। আশা করছি, তিনি টেসলায় আরও উন্নতি করবেন।”

ভবিষ্যতে মাস্কের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের কোনো সম্ভাবনা রয়েছে কি না— এমন প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেন, “আমি এখন অন্যান্য ইস্যু নিয়ে খুবই ব্যস্ত। সম্ভবত তার সঙ্গে কথা বলার সময় পাবো না।”

বৈদ্যুতিক গাড়ি প্রস্তুতকারী কোম্পানি টেসলা, মহাকাশযান, মহাকাশ অভিযানের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ নির্মাণকারী কোম্পানি টেসলা এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সের মালিক ইলন মাস্কের সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠতার শুরু ২০২৪ সালের জুলাই থেকে। সে সময় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা চলছিল। রিপাবলিকান পার্টির শীর্ষ নেতা ও প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ট্রাম্পের বিভিন্ন প্রচারণা সভায় তখন মাস্ককে নিয়মিত দেখা গেছে। এক প্রতিবেদনে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণা তহবিলে কমপক্ষে ২৮ কোটি ৮০ লাখ ডলার চাঁদা দিয়েছিলেন মাস্ক।

তার পুরস্কারও অবশ্য তিনি পেয়েছিলেন ট্রাম্পের কাছ থেকে। নির্বাচনে জয়ী হয়ে শপথ নেওয়ার পর সরকারি কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও সরকারি ব্যয় সংকোচন করতে ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি বা ডজ নামের একটি দপ্তর খোলেন ট্রাম্প। সেই দপ্তরের প্রধান করা হয় মাস্ককে।

সম্প্রতি কর মওকুফ এবং প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বৃদ্ধি সংক্রান্ত একটি সরকারি বিলে ট্রাম্প সাক্ষর করায় মতানৈক্য শুরু হয় মাস্ক ও তার মধ্যে। এই মতানৈক্যের এক পর্যায়ে গত মে মাসের শেষ দিকে ট্রাম্প প্রশাসন থেকে অব্যাহতি নেন মাস্ক।

অব্যাহতি নেওয়ার পর বেপরোয়া হয়ে ওঠেন তিনি। ট্রাম্পের স্বাক্ষরিত বিলটি আটকাতে জনগণকে মাঠে নামার আহ্বান জানান, কুখ্যাত ও সাজাপ্রাপ্ত যৌন অপরাধী জেফ্রি এপস্টেইনের সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ক ছিল বলে দাবি করেন এবং ট্রাম্পকে ‘অকৃতজ্ঞ’ উল্লেখ করে অভিযোগ করেন যে তিনি অর্থ সহায়তা না দিলে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরে যেতেন।

শনিবারের সাক্ষাৎকারে এনবিসি’র পক্ষ থেকে ট্রাম্পকে জিজ্ঞেস করা হয় যে মাস্ক যদি এখন বিরোধী দল ডেমোক্র্যাট পার্টিকে নিয়মিত চাঁদা দিতে থাকেন তাহলে কী হবে?

জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলেন, “যদি তিনি এমন করেন, তাহলে তার পরিণতি হবে গুরুতর এবং এজন্য তাকে চড়া মূল্য দিতে হবে।”

সূত্র : এনবিসি